গত জুনের পরীক্ষার একমাস আগে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলাম আইবিএতে পরীক্ষা দিব। বই কিনলাম কিছু। দুইদিন পড়ার চেষ্টা করলাম।
পরে শোনা গেল ৩ এর নিচে যাদের সিজিপিএ তারা পরীক্ষা দিতে পারবেনা। হতাশ হয়ে গেলাম। আমার সিজিপিএ ছিল ২.৬৫। এরপর পরীক্ষার ঠিক চার পাঁচ দিন আগে আইবিএ অফিস জানালো যে পরীক্ষা দিতে পারবো।
পড়া আর হলো না, বলতে গেলে প্রিপারেশান ছাড়াই হলে ঢুকলাম। ইংরেজি আর অংক ভালোই হলো। সমস্যা হলো এনালিটিকালে।
সময় ছিল মাত্র ১১-১২ মিনিট, ভেবেছিলাম ১৫ টি প্রশ্নের জন্য এটি যথেষ্ট। পরে বুঝেছি এনালিটিকালের জন্য আসলে শেষের ১০-১২ মিনিট যথেষ্ট না, শেষে এনালিটিকাল ফেস করাও উচিৎ না।
৬০টা মানসম্পন্ন প্রশ্ন ফেস করার ফলে মাথা স্ট্রেসড থাকে। কোনো পাজলই ঠিক মত সলভ করতে পারলাম না। শেষমেশ আন্দাজে দাগিয়ে চলে এলাম। এবং স্বভাবতই চান্স পেলাম না।
কারণ আইবিএতে সব বিভাগেই আলাদা আলাদা পাশ মার্কস লাগে। এনালিটিকাল এবেলিটিতে যে পাশ যে হয় নাই সেটা বলাই বাহুল্য। ভুল গুলো থেকে শিক্ষা নিলাম।
বুঝতে পারলাম, আইবিএর পরীক্ষার জন্য সঠিক স্ট্রাটেজি দরকার। কারণঃ পরীক্ষায় যে ৭৫টি প্রশ্ন আসে তার সবগুলো দেড় ঘন্টায় আসলে সল্ভ করা প্রায় অসম্ভব।
যদি সব সল্ভ করতে চান, তবে আপনাকে সুপারম্যান হতে হবে। যেহেতু আপনি আমি সুপারম্যান না, সেহেতু আমাদের প্রতি সেকশান থেকেই কিছু কিছু প্রশ্ন বাদ দিয়ে যেতে হবে।
যাতে সব বিভাগে ৬০% এর উপরে মার্কস থাকে এটা খেয়াল রাখা জরুরী। প্রতি বিভাগে মোটামুটি অন্ততঃ ৬০% মার্কস পেলে ধরে নিতে পারেন আপনাকে ভাইভার জন্য ডাকা হবে।
ঠিক করলাম ডিসেম্বরের পরীক্ষায় এনালিটিকাল এবিলিটি আগে ফেস করবো, এর পর ইংরেজি, তারপর ম্যাথ।
ম্যাথ হলো আমার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক, তাই শেষ সময়ের চাপের মুখে দমে যাবোনা শেষে এই ভরসা রাখলাম। এনালিটিকালের জন্য বরাদ্দ করলাম ২৫ মিনিট, ইংরেজির জন্য ২০ মিনিট আর অঙ্কের জন্য ৪৫ মিনিট।
বাস্তবে যেটা হয়েছিলঃ এনালিটিকালে লেগেছিল ২৭ মিনিট, ইংরেজিতে ২৬ মিনিট, অংকে পেয়েছিলাম ৩৭ মিনিট। এনালিটিকাল সল্ভ করেছিলাম ১৩টা, ইংরেজি ২২টা, অংকও ২২ টা।
এবার আসি প্রিপারেশান নিয়ে। প্রথমে খুঁজে বের করতে হবে আপনি কোন দিকে দুর্বল। গণিতে আমি তেমন দুর্বল নই, তাই আমি গণিত নিয়ে প্রিপারেশান নেওয়া হয় নাই অতোটা।
তবে টাইম ধরে আগের সালের প্রশ্নে গণিতের পরীক্ষা দিয়েছি নিজে নিজে বেশ কয়েকটার। প্রচুর মুভি আর ইন্টারনেটের বদৌলতে ইংরেজি গ্রামার নিয়ে আমার সমস্যা কম ছিল।
তারপরেও ক্লিফ’স টোএফেল এর কিছু অধ্যায় সল্ভ করেছি। আগের সালের প্রশ্ন নেড়েচেড়ে দেখলাম, ভোকাবুলারিতে আমার দুর্বলতা আছে। ৩০০-৪০০ শব্দ খুঁজে বের করলাম যেগুলো বহুল ব্যবহৃত কিন্ত আমার অজানা।
এবার ওগুলো প্রাকটিস করা শুরু করলাম। (বলে রাখা ভালো, আমি ৩০০ শব্দ পড়েছি বলে আপনিও ৩০০ শব্দ পড়ে বসে থাকবেন না। অনেককে আইবিএ প্রিপারেশানের জন্য ৩০০০ ভোকাবুলারিও পড়তে দেখেছি।)
তবে এটাও ঠিক আইবিএর এক্সামে ভোকাবের গুরুত্ব আগের চেয়ে বেশ কমে গেছে । তাই আবার Word এর দিকে অনেক বেশী ফোকাস করার দরকার নেই ।
সবচেয়ে বেশি প্রিপারেশান নেওয়া হয়েছে এনালিটিকাল সেকশানের জন্য। কারণ এই সেকশানেই আমার ভরাডুবি হয়েছিল। প্রশ্ন এনালাইসিস করে দেখলাম প্রায় সব পাজলই আসে GRE Big Book থেকে।
বইটাতে ২১৪ টার মত পাজল আছে। টার্গেট করলাম সব গুলা পাজল সল্ভ করে যাবো। প্রথম দিকে প্রচুর উদ্যম পেলেও শেষের দিকে ঝিমিয়ে গেল। পরীক্ষার ২০ দিন আগে খেয়াল করলাম অর্ধেকের মত সল্ভড হয়েছে।
ঐ বিশ দিন কষ্ট করে বাকি গুলা সল্ভ করে ফেললাম। সাথে ভোকাবুলারির প্রাকটিসও চলতে থাকলো। আগের সালের প্রশ্নও কিছু সল্ভ করলাম বন্ধুদের সাথে বসে।
পরীক্ষার হলে গিয়ে যখন দেখলাম তিন তিনটা পাজল এসেছে, খুবই আনন্দিত হয়েছি। পরীক্ষার আগে নিজেকে প্রিপেয়ার্ডই মনে হয়েছিল । এতটাই নিশ্চিন্তে ছিলাম যে পরীক্ষার আগের দুইদিন পড়াই হয় নাই।
পরীক্ষার আগের দিন মনের সুখে মুভি আর সিরিয়াল দেখে সময় কাটিয়েছি। সারারাত এগুলা করে পরীক্ষার দিন দুপুরে ঘুম থেকে উঠে রিল্যাক্স মুডে পরীক্ষা দিতে গিয়েছি।
প্রত্যেক দিন সময় ধরে পড়াশোনা করেছি এমন না। তবে খুব গ্যাপ দেই নি। যখন মনে হয়েছে গ্যাপ হয়ে যাচ্ছে, দু একটা পাজল সল্ভ করেছি। ভোকাবুলারি পড়েছি মাঝে মাঝে।
ঢিলে তালে চলতে চলতে পরীক্ষার ১৫-২০ দিন আগে খুব সিরিয়াস হয়ে গিয়েছিলাম। তিন চারদিন খুব ভালো পড়াশোনা হয়েছে, এরপর মক টেস্টে মোটামুটি ভালো হচ্ছে দেখে পড়াশুনা আবার ঝিমিয়ে পড়েছে এরপর।
যেটি বুঝেছি, আপনারে ভিতরের পটেনশিয়ালের চেয়ে ঐ দেড়ঘন্টায় আপনার পারফর্মেন্সই বড় ব্যাপার। যে বই গুলো আমি কিনেছিলাম, সেগুলোর লিস্ট দেখুন এই লিংক থেকে
ও, আর রিটেন সেকশানে ভালো করার জন্য ইংরেজি পেপার পড়তে পারেন। যে ভোকাবুলারি গুলো পড়ছেন সে গুলো এই সেকশানে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
গ্রামারে ভুল যেন না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরীক্ষার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই নিয়মিত কোনো টপিক নির্ধারণ করে লিখতে থাকুন।
অন্য কোন অভিজ্ঞ বন্ধুদের সে লেখা পড়িয়ে নিজের ভুলগুলো শুধরে ফেলুন। আমি নিজে এই সেকশান নিয়েও তেমন প্রিপারেশান নেইনি।
যেটি করা উচিৎ মনে হলো সেটি বললাম। নিজের উপর আস্থা রাখুন। বিন্দুমাত্র নেগেটিভ মনোভাব নিয়ে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন না।
প্রচুর মানসিক শক্তি, তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, গাণিতিক ও যুক্তিভিত্তিক দক্ষতা এবং পরিশ্রম, এই গুলোর সমন্বয়েই আপনি এই টেস্টে কোয়ালিফাইড হতে পারবেন।
গুড লাক !
যে স্পেশাল ব্যাচগুলো থেকে আইবিএর ২০১৭ এর ডিসেম্বর ইনটেকে প্রায় ৩২ জন রিটেনে কোয়ালিফাই করেছে সে স্পেশাল রেগুলার ব্যাচগুলোতে আইবিএ এমবিএর জন্য ভর্তি চলছে ।
Capstone Education গত ৪ ইনটেক ধরেই আইবিএর এমবিএতে সাফল্যের শীর্ষে ।
প্রস্তুতিকে আর সহজ আর স্মুথ করতে Capstone Education দিচ্ছে লাইফ-টাইম স্টুডেন্টশীপ ভ্যালিডিটি ।
অর্থাৎ, একবার ভর্তি হলে পরেরবার কোর্সটি ফ্রি রিপিট করতে পারছেন ।
এছাড়াও দুর্বল ব্যাসিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ব্যাসিক ডেভেলপমেন্ট ক্লাসের ব্যাবস্থাও ।
আইবিএ এমবিএর জুন ২০১৮ এর স্পেশাল ব্যাচে ক্লাস করতে আগ্রহীরা রেজিস্ট্রেশন করুন এই লিংক থেকে
যারা JOB এবং এমবিএ দুটোর প্রস্তুতি এক সাথে নিতে চান তাদের জন্য রয়েছে Capstone এর সময়োপযোগী কোর্স MBA + All JOB Solution.
এই ব্যাচগুলোর অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছেঃ
একবার ভর্তি হয়ে জব কনফার্ম না হওয়া পর্যন্ত এখানে ক্লাস করা যাবে, কোন ধরণের এডিশনাল ফি দিতে হবে না । এছাড়া দুর্বল ব্যাসিকের শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে ফ্রি ব্যাসিক ডেভেলোপমেন্ট ক্লাস ।
পান্থপথ, মৌচাক এবং চিটাগাং ব্রাঞ্চে ক্লাস করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করুন এই লিংক থেকে

	                        	                    
	                        	                    
	                        	                    
	                        	                    
Recent Comments